সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
শামীম ওসমানের সমর্থন যিনি পাবেন তিনিই হবেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী। ইতোমধ্যে একই বলয় থেকে এই সাংসদের মর্থন আদায়ে চারজন রয়েছেন সক্রিয়। তারা হচ্ছেন ইব্রাহীম চেঙ্গিস, নাজিমউদ্দিন, শাহ্ নিজাম এবং শাজাদাৎ হোসেন ভূ্্ঁইয়া সাজনু। এরমধ্যে প্রথম দুজনকে নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও পরের দুজন রয়েছেন মূল আলোচনায়।
ধারণা করা হচ্ছে এই দু’জনের একজন পাবেন সাংসদ শামীম ওসমানের সমর্থন। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সেই একজন কে হতে পারেনÑ নিজাম নাকী সাজনু? মাঠের রাজনীতিসহ সার্বিক বিবেচনায় তাদের মধ্যে কে বেশি এগিয়ে আছেন। মাঠ জরিপে কে বেশি এগিয়ে রয়েছেন।
১৫ বছর পর এই উপজেলা পরিষদে নির্বাচন হতে যাওয়ায় এ নিয়ে সবার মাঝেই বিরাজ করছে একটু বাড়তি উত্তেজনা। সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন এমন একজন জনপ্রতিনিধি যিনি সবসময় তাদের সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নিবেন। পাশে থাকবেন বিপদে আপদে। সাংসদ শামীম ওসমান যাকেই সমর্থন দিক না কেন, সেই ব্যক্তিটি যেন তেমন হোনÑ এমন প্রত্যাশাই করছেন সাধারণ মানুষ।
তারা বলছেন, যে চারজন প্রার্থী হতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া সাজনু বিভিন্ন সময়ে সহায্য সহযোগিতা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তার কাছে কোনো মানুষ সহযোগিতার জন্য গেলে তিনি তাকে শূন্য হাতে কখনই ফেরাননি। সমর্থ অনুযায়ি অসহায়, দুঃস্থ মানুষের জন্য সবময় কিছু না কিছু করার চেষ্টা তিনি করেছেনই। বিপরীতে শাহ্ নিজমের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি লক্ষ্যণীয় ছিল না। অন্যদিকে ইব্রাহীম চেঙ্গিস সবার কাছেই অতিথি পাখির মতো। এছাড়াও আরও একজন যিনি ভাইস চেয়ানম্যান হিসেবে রয়েছেন তিনিও চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে আগ্রহী। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি সাধারণ মানুষের পাশে সেভাবে কখনই থাকেননি। সার্বিক মূল্যায়নে সাজনু সবার থেকেই অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছেন। দলমত নির্বিশেষে প্রার্থী হিসেবে মানুষ তাকে গ্রহণ করবেন বলেও মনে করা হচ্ছে। এবং সাজনু যদি প্রার্থী হোন তাহলে ভোটের পার্সেন্টিসও বাড়বে তুলনামূলকভাবে। ফলে অনেকেরই প্রত্যাশা, সাজনু হোক তাদের চেয়ারম্যান প্রার্থী।
এদিকে শাহ্ নিজাম ও সাজনু দুজনই সাংসদ শামীম ওসমানের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত। দুজনের কদরই এই সাংসদের কাছে সমান। তারপরও একজনকেই দিতে হবে সমর্থন। তেমন অবস্থায় কাকে রেখে কাকে বেছে নিবেন এই সাংসদ তা কিছুটা হলেও বিব্রতকর ব্যাপার বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সার্বিকদিক বিবেচনা করলে সাজনুকেই বেছে নেওয়া উচিৎ বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
তারা বলছেন, সাজনু প্রয়াত গোলাম সারোয়ারের ছোট ভাই। সারোয়ার পরিবারের ত্যাগ ওসমান পরিবারের জন্য কম নয়। ওসমান পরিবার বলতে সারোয়ার পরিবার অজ্ঞান। নিবেদিত। ফলে এবার এই পরিবারের জন্য কিছু করারও সুযোগ এসেছে সাংসদ শামীম ওসমানের সামনে। সেই বোধ বিবেচনা থেকে সাজনুকে সমর্থন দিলে অন্যরাও অখুশি হবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে স্থানীয়রা বলছেন, গোলাম সারোয়ার ব্যক্তি হিসেবে কেমন সি বিবেচনা যদি করতে হয় তাহলে এক কথায় বলতে হবেÑ তিনি ছিলেন গরীব মানুষের পক্ষের একটি শক্তি। শামীম ওসমানের পক্ষে অসংখ্য কর্মী তৈরিতে তার ভূমিকা অতুলনীয়। অনেককেই তিনি শামীম ওসমানের পক্ষে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা দিয়ে কর্মী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। কর্মী বান্ধব হিসেবে সবার কাছেই ব্যাপক পরিচিত ছিলেন গোলাম সারোয়ার। তার কর্মী সমর্থকের সংখ্যাও কম নয়। এখনও গোলাম সারোয়ারের নামের ওপর অনেকেই ফিদা। সারোয়ারের কর্মী বলতে গর্ববোধ করেন এখনও অনেকে। সেই সারোয়ারের ছোট ভাই হিসেবে সাজনু নিজেও ওই ধারাটা ধরে রেখেছেন। কর্মীদের জন্য নিবেদিত প্রাণ তিনিও। তবে প্রচারে তাকে খুবই কম দেখা যায়। প্রচার বিমুখ সাজনু নিজের মত করেই মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে যে চারজনের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে তারা সাজনুকেই এগিয়ে রাখছেন। শাহ্ নিজামকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলে তিনি একপেশি হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে সাজনুই রয়েছেন এগিয়ে। ফলে মানুষের প্রত্যাশা সাজনু হোক তাদের আগামী দিনের চেয়ারম্যান। তবে বাকিটা নির্ভর করছে শামীম ওসমানের ওপর। এখন দেখার বিষয় মাঠ জরিপকে তিনি গ্রাহ্য করেন নাকি নিজের খেয়াল খুশি মতো যাকে খুশি তাকে সমর্থন দেন।